Fiction : THE TELL-TALE HEART
                 By : Edgar Allan Poe

সত্যি! – নার্ভাস — ভীষণ নার্ভাস আমি ; কিন্তু কেন তুমি আমাকে পাগল বলবে ? এই রোগ আমার অনুভুতিকে আরও তীক্ষ্ণ করেছে – ধ্বংস করে নি – অনুভূতিহীনও করে নি । আমার ইন্দ্রিয়সকলের মধ্যে শ্রবণ অনুভুতি সবচেয়ে ভালো কাজ করছে । আমি সব কিছু শুনতে পারছি , এই পৃথিবীর কোনায় কোনায় যে সব কথাবার্তা হচ্ছে সব শুনতে পারছি , পৃথিবীর ওপারের শব্দও কানে ভেসে আসছে । শুনো ! খেয়াল করো পুরো বিষয়টা – কতো ভালোভাবে আমি পুরো গল্পটা তোমাদেরকে বলছি ।
কিভাবে এই ব্যাপারটা মাথায় এসেছে তা আমার পক্ষে বলা অসম্ভব । কিন্তু এটি আমাকে দিন রাত আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো । কোন কারন ছিল না সেখানে । আবেগও ছিল না । আমি এক বৃদ্ধকে ভালবাসতাম । তিনি আমার সাথে কোনদিন ভুল কিছু করে নি । আমাকে কোনদিন অপমানও করে নি । তাঁর দামি কোন জিনিষের প্রতি আমার কোন লোভ ছিলো না । সেটি ছিল তাঁর চোখ। হ্যাঁ , এটিই । তাঁর শকুনের চোখ ছিল , ফিকে নীল ঘোলাটে রঙের চোখ । যখন তাঁর চোখ আমার উপর পড়তো , আমি রক্ত হিম হয়ে যেতো । ধাপে , ধাপে – আস্তে আস্তে – আমি লোকটির জীবন কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই । এইভাবেই , সারা জীবনের জন্য সেই চোখ থেকে মুক্তি পাই ।
এখন , ব্যাপার এইটাই । তুমি আমাকে পাগল মনে করো । পাগল তো কিছুই জানে না । কিন্তু আমাকে তোমার দেখা উচিত । তোমার খেয়াল করা উচিত কিভাএ আমি এগিয়েছিলাম — অনেক সতর্কতার সাথে — কতো কিছু চিন্তা ভাবনা করে – কতো ভান , চালাকির আশ্রয় নিয়ে এই কাজ করতে হয়েছে ! আমি সেই বৃদ্ধকে মারার আগে তাঁর প্রতি আমার কোন দয়া ছিল না । প্রতি রাতে , মাঝরাতের দিকে – আমি আস্তে আস্তে কড়া ঘুরিয়ে তাঁর দরজা খুলতাম । আহ্‌ । খুব আস্তে ! তারপর , আমি মাথা ঢুকানোর জন্য পর্যাপ্ত পরমাণ জায়গা পেয়ে গেছি । তারপর হারিকেনে বাতির আঁচটা একদম কমিয়ে দিলাম , সব বন্ধ – চারিদিকে সব বন্ধ । কোন ধরনের আলো দেখা যাচ্ছে না । আমার মাথা ঢুকিয়ে দিলাম । আহ্‌ , তোমরা দেখলে হয়তো হাসতে , কিভাবে আমি কতো ধূর্ততার সাথে এই কাজ করলাম । । আমি আস্তে আস্তে করে ঢুকছি – আস্তে , খুব আস্তে , যাতে বৃদ্ধ লোকটার ঘুমের কোন ব্যাঘাত না হয় । আমার মাথাটা ঢুকাতেই এক ঘণ্টা কেটে গেছে । তখন পর্যন্ত দেখেছি , লোকটি ঘুমিয়ে আছে । আহ্‌ । কোন পাগলের কি এতো বুদ্ধি থাকতে পারে । মাথা ঢুকানোর পর , আমি হারিকেনের আঁচটা অল্প বাড়িয়ে দিলাম – অনেক সতর্কতার সাথে – আস্তে আস্তে — হারিকেনের অল্প আলোর আঁচটা চোখের উপর পড়ছে । আর এটিই আমি সাতরাত ধরে একটানা করলাম – প্রত্যেক মাঝরাতে – কিন্তু তাঁর চোখ বন্ধ পেতাম । তাই কাজ করার জন্য অসম্ভব ব্যাপার ছিলো । আমি যত জ্বালা এই মানুষটিকে নিয়ে না – তাঁর শয়তান চোখ নিয়ে । প্রত্যেক সকালে আমি নির্ভয়ে রুমে যেতাম , তাঁর সাথে সাহস করে কথা বলতাম । তাঁর নাম ধরে নরম সুরে জানতে চাইতাম , কিভাবে তাঁর রাত কেটেছে । তাহলে তোমরা বুঝতেই পারছো কি ধরনের পাকা লোক তিনি ছিলেন । শুধু মাত্র তাঁর কোন সন্দেহ হয়েছিল কিনা তা বুঝতেই , আমি প্রতি রাতে বারোটার সময় ঘুমানোর সময় আমি তাকে দেখতে যেতাম ।
আট দিনের মাথায় , দরজা খোলার ব্যাপারে আমি আরও সতর্ক ছিলাম । আমার চেয়ে ঘড়ি কাটা আরও জোরে ঘুরছে । সেই রাতের আগে আমার সূক্ষ্মদৃষ্টি ক্ষমতা সম্পর্কে টের পাই নি । আমার জয়ের আনন্দটা মনে ধরে রাখতে পারছিলাম না । চিন্তা করার বাইরের ব্যাপার , আমি সেখানে আছি , আস্তে আস্তে দরজা খুলছি , আর সে আমার ব্যপারে কিছুই জানে না । ব্যাপারটা আমার মনে আসতেই আমার হাসি এলো । বোধ হয় , হাসির শব্দ তাঁর কানে গিয়েছে । হঠাৎ চমকে যাওয়ার মতন সে বিছানাতে নড়ে উঠলেন । এখন তোমার মনে হতে পারে , আমি পিছনে সরে গিয়েছি- কিন্তু না । রুম পুরোই অন্ধকার – একটুও আলো নেই সেখানে । ডাকাতের ভয়ে জানালাগুলো শক্ত করে বাধা হয়েছে । এমনকি আমি খোলা দরজা পর্যন্ত দেখতে পারছি । আমি আস্তে আস্তে তা
ঢেলতে থাকলাম ।
যখন আমি মাথাটা নিচু করে হারিকেনের বাতিটা বাড়াতে যাচ্ছিলাম , তখন বুড়ো আঙ্গুলটা টিনের গায়ে লাগলো । বৃদ্ধ লোকটি লাফ দিয়ে উঠে বসে চিৎকার করে বলতে লাগলো -” কে ওখানে ? ”
আমি সেখানেই চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম , কিছুই বলে নি । এক ঘণ্টা আমি একটুও নড়ে নি । এমন কি তাকে শুয়ে পড়ার শব্দও পেলাম না । সে এখনও কান পেতে রয়েছে — রাতের পর রাত আমি যা করলাম তাই , মৃত্যুর ঘণ্টা শুনতে পারছে ।
হঠাৎ আমি অস্ফুট আর্তনাদের আওয়াজ পেলাম । মৃত্যুর ভয়ের পেলে সেই গোঙানির আওয়াজ শোনা যায় । কোন কষ্ট বা দুঃখের কান্না না সেটা । মুখ বন্ধ করে ভয়ে চিৎকার দিলে যেই ধরনের আওয়াজ শোনা যায় ঠিক সেই রকম । আমি ভালো করে এই শব্দটাকে চিনি । গভীর রাতে , যখন সবাই ঘুমিয়ে থাকে , তখন বুকের গভীর থেকে এটি উৎসারিত হয় । এই ধরনের গভীর ভয়ানক প্রতিধনি আমাকে বিহ্বল করে তোলে । আমি এটিকে ভাল করে চিনি । বুড়ো লোকটির মনে অবস্থাটি আমি বুঝতে পারছি , যদিও আমার হাসি চলে আসছিলো , তারা প্রতি আমার দয়া হলো । আমি জানতাম প্রথম শব্দ শুনার পর সে জেগে শুয়ে আছে । এক ধরনের ভয় তাকে গ্রাস করে ফেলছে । সে ভয়কে তাড়ানোর চেষ্টা করেছে , কিন্তু পারছে না । সে নিজে নিজে স্বান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছে – ” মনে হয় চিমনি থেকে বাতাস আসছে , নয়তো ঘরে ইদুরের শব্দ , আর নয়তো ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ ” । সব কিছুই নিরর্থক ঠেকলো । মৃত্যুর কালো ছায়া তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছে । আরও করুন ব্যাপার সেই ছায়াকে না সে চিনতে পারছে অথবা অনুভব করতে পারছে ।
যখন আমি অনেক্ষন পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলাম , অধীর ধৈর্যের সহিত , তাঁর শোবার কোন ধরনের আওয়াজ ছাড়া আমি হারিকেনের বাতিটি একটু বাড়িয়ে দিলাম । যখন আমি তা বাড়াচ্ছিলাম – তুমি ভাবতে পারবে না কতো চুপিসারে , তাঁর অলক্ষ্যে – একটু ছোট আলোক রশ্মি , মাকড়সার জালের মতন , সেই শকুনের চোখের উপর পড়ছে ।
এটি অনেক বড় – প্রশস্ত – খোলা – এবং আমি ভয় পেয়ে গেছি যখন সেটির উপর তাকিয়ে আছি । আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি – খোলাটে নীল , এক ধরনের হিংস্রতার পর্দা সেই চোখের উপর , দেখলে পুরো শরীর হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় জেঁকে বসে । কিন্তু আমি বৃদ্ধ লোকটির চেহারা – শরীর কিছুই দেখতে পারছি না , কারন আমার চোখ সেই চোখ থেকে সরে নি ।
আমি কি এখনো বলেছি , সূক্ষ্মদর্শিতাকে পাগলামি ভেবে তুমি কি ভুল করেছো ? এখন , আমি বলছি এক ধরনের ধীর , আস্তে কিন্তু একটা দুত একটা শব্দ আমার কানে এলো – ঘড়িকে তুলা দিয়ে ঢেকে রাখলে যেমন শব্দ হয় ,ঠিক সেই রকম । আমি এই শব্দ ভাল করে চিনি । সেটি লোকটির হৃদস্পন্দের শব্দ । সেই শব্দ আমার ক্রোধকে আরও বাড়িয়ে দিলো – সৈন্যকে সাহস বাড়ানোর জন্য যেনো ড্রাম বাজানো হচ্ছে ।
কিন্তু আমি এখনো কিছুই করি নি , স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে থেকেছি । আমি অনেক ভয়ে ভয়ে শ্বাস নিচ্ছিলাম । হারিকেনটা স্থির করে রাখলাম । আমি অনেক ধীরে ধীরে চেষ্টা করছিলাম বাতিটির আলো বাড়াতে কিন্তু সেই লোকের ঘুমের ব্যাঘাত যাতে না হয় । একই সময়ে , সেই হার্টবিটের শব্দ আরও বেড়ে গেলো । অনেক দ্রুত , জোরে জোরে শব্দ হচ্ছে । মনে হচ্ছে লোকটির ভয় আরও বেড়েছে । আস্তে আস্তে বাড়ছে ! তোমার কি মনে হচ্ছে আমি নার্ভাস ? হ্যাঁ তা ঠিক । এখন রাতের মৃত্যুর সময় , চারদিকের ভয়াবহ নিস্তব্ধতা বাড়িটিকে ঘিরে ।এই ধরনের অদ্ভুত শব্দ আমাকে আরও ভয় পাইয়ে দিতে পারে । এখনো আমি নিশ্চল , স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে আছি । কিন্তু শব্দ ধীরে ধীরে বাড়ছে ! আমার মনে হচ্ছে বুকটা মনে হয় ফেটে যাবে । তখন একটা ব্যপার আমাকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিলো । প্রতিবেশীরাও মনে হয় সেই শব্দ শুনতে পাবে ! লোকটির সময় চলে এসেছে ! একটা বড় চিৎকার দিয়ে , আমি হারিকেন ছুড়ে আমি রুমে লাফ দিয়ে উঠলাম । সেও জোরে জোরে চেঁচিয়ে উঠলো । মুহূর্তেই , আমি তাকে এক টানে মেঝেতে নামিয়ে ফেললাম । ভারি বিছানাটা তাঁর উপর ফেলে দিলাম । অনেক টুকু কাজ প্রায় হয়ে এসেছে – এই ভেবে , আমার তখন আনন্দে হাসি চলে এসেছিলো । কিন্তু অনেক্ষন পর্যন্ত হৃদ স্পন্দের চাপা শব্দ শুনতে যাচ্ছে । এটি আমার জন্য কোন ঝামেলার তৈরি করে নি , কারন দরজার বাইরে সেই শব্দ শোনা যাচ্ছে
না । অনেক্ষন পর সেই শব্দ মিলিয়ে গেলো । বৃদ্ধ লোকটি মারা গিয়েছে , আমি বিছানাটা সরিয়ে , মৃত শরীরটা পরিক্ষা করছিলাম । হ্যাঁ, সেই একদম মারা গিয়েছে । আমি তাঁর বুকে অনেক্ষন হাত রেখেছিলাম । সেখানে কোন ধরনের কম্পন নেই । সেই লোকটি আমাকে আর জ্বালাবে না ।
এখনো যদি তুমি আমাকে পাগল মনে করো , তাহলে আর তুমি তা ভাববে না , যখন আমি সতর্কতার সাথে দেহটাকে লুকিয়ে রাখার পরকল্পনার কথা করছি । রাত শেষের দিকে । আমি দ্রুত কাজ করছি , কিন্তু নিঃশব্দে । প্রথমে আমি লাশটাকে ভাগ ভাগ করলাম , আমি মাথা কেটেছি , পরে মাথা , পা ।
পরে মেঝে থেকে  একটি তক্তা নিয়ে সেগুলোকে স্তুপ করে রাখলাম । তারপর সেই তক্তাগুলোর আগের জায়গার  নিচে  লাশগুলো রেখে  তক্তাগুলো আগের  জায়গায় রেখে দিলাম – অনেক সতর্কতার সহিত , কোন মানুষের চোখ পর্যন্ত কিছু ভুল বের করতে না পারে । কোন ধরনের পরিষ্কারের চিহ্ন নেই – কোন প্রকারের দাগ নেই – কোন রক্তের দাগ নেই । এমি অনেক সতর্ক ছিলাম । একটা বালতিতেী সব কিছু ধরে গিয়েছিলো – হা! হা !
যখন সমস্ত কাজ প্রায় শেষ , তখন চারটা বাজে – একদম অন্ধকার চারিদিকে । দরজা খুলতে ঘণ্টার শব্দ হলো , আমি ফুরফুরে মেজাজে আস্তে আস্তে করে নেমে গিয়েছি – কোথাও কোন ভয় নেই । সেখানে তিনজন লোক এলো । ভদ্রভাবে তারা নিজেদেরকে পুলিশ অফিসার হিসেবে বর্ণনা দিলেন । রাতেএক প্রতিবেশি একটি চিৎকার শুনেছিল । সন্দেহ হচ্ছে কোথাও জুয়া খেলার আসর বসেছে কিনা । পুলিশকে তথ্যটি জানানো হয়েছে , তাই তারা এলাকা সার্চ করতে এসেছে ।
আমি হাসলাম – কেন আমি ভয় পাবো ? আমি তাদেরকে ওয়েলকাম জানালাম । আমি স্বপ্নের ভিতরে চিৎকার দিয়ে উঠেছিলাম । বৃদ্ধ লোকটির ব্যাপারে বললাম , সে বাইরে থাকে । আমি তাদেরকে আমার ঘরে নিয়ে এলাম । তাদেরকে ভালো মতন সব সার্চ করতে দেইলাম । আমি তাদেরকে রুম দেখিয়ে দিলাম । তার টাকা পয়সা সব নিরাপদেই আছে , তা তাদেরকে দেখালাম । আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েই চললো । আমি তাদেরকে রুম থেকে চেয়ার নিয়ে এসে তাদেরকে বাকি রুম চেক করতে দিলাম , যাতে কোন সন্দেহ না থাকে। আমি জয়ের নেশায় নাচতে ইচ্ছে
করছিলো , যেখানে লাশগুলো রাখা হয়েছে সেই জায়গার উপর চেয়ার রাখলাম ।
অফিসাররা অনেক সন্তুষ্ট । তাদেরকে আমি সব বোঝাতে পেরেছি । আমি একদম নিশ্চিন্তে ছিলাম । তারা বসে আমার সাথে কিছুক্ষন কথাবার্তা বললো , আমিও উত্তর দিচ্ছিলাম । কিন্তু কিছুক্ষন পর , আমি কিছুটা অস্বস্তিবোধ করছিলাম । তাদেরকে চলে জাবার অনুরোধ করলাম । আমার মাথা ব্যাথা করছে । মনে হয় কে জানি ঘণ্টা বাজাচ্ছে । কিন্তু আমি এখনো কথা বলেই জাচ্ছি । ঘণ্টার ধ্বনি আস্তে আস্তে আরও স্পষ্ট হচ্ছে । আমি তাদের সাথে আরও স্বচ্ছন্দে কথা বার্তা করতে থাকলাম । চালিয়ে নিচ্ছিলাম – কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম শব্দটা আমার কানে হচ্ছে না ।
নিঃসন্দেহ আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম । কিন্তু আরও উচু স্বরে দ্রুত কথা বলছি – শব্দটা আরও দ্রুত হচ্ছে । আমি কি করতে পারি ? এটি খুব নিচু, অস্পষ্ট, দ্রুত শব্দ – ঘড়িকে তুলার দিয়ে ঢেকে রাখলে এই ধরনের শব্দ হয় । আমি হাঁ করে শ্বাস নিতে থাকলাম । কিন্তু এখনো অফিসাররা তা শুনে নি । আমি ঠিকমতণ কথা চালিয়ে নিলাম । কিন্তু আস্তে আস্তে শব্দ বাড়ছে । আমি উঠে সামান্য ব্যাপার নিয়ে তর্ক করা শুরু করেছিলাম । কিন্তু শব্দ বেড়েই চললো । কেন তারা যাচ্ছে না ? আমি এদিকে সেদিক পায়চারি করতে থাকলাম । মনে হচ্ছে তাদেরকে দেখে আমি অনেক চিন্তিত । – কিন্তু শব্দ কমার কোন লক্ষণ নেই । আহ্‌ , গড ! আমি কি করবো এখন ? কথা বলতে বলতে আমার ফেনা চলে এলো । আমি চেয়ারও দোলাতে থাকলাম । চেয়ার সরাতে গিয়ে ফ্লোরেও শব্দ হয়েছিলও । কিন্তু শব্দ ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকলও । কিন্তু এখনো তারা কথা বলেই চলছে । এটি কি সম্ভব তারা এটি শুনে নি ? আহ, গড্‌ ! – না না ! তারা শুনে ফেলেছে ! – তারা সন্দেহ করেছে! তারা জানে ! – তারা আমার ভয়ের মজা নিচ্ছে ! এটিই আমি ভাবছিলাম , এটিই আমি ভাবছিলাম । কিন্তু এই ধরনের যন্ত্রণার চেয়ে যে কোন কিছু ভাল ছিল ! এই যন্ত্রণার ছাড়া যে কোন কিছু সহ্য করা যায় – আমি এই ধরনের তামাশা আর সহ্য করতে পারছি না ! আমার মনে হচ্ছে আমি চিৎকার দিয়ে মরে যাই – আবার ! — শোনা যাচ্ছে ! জোরে ! আরও জোরে !!
“শয়তান! “আমি চিৎকার দিয়ে উঠলাম , “আর ভান করতে হবে না ! আমি এই ঘটনা ঘটিয়েছি ! এই তক্তাটা উঠান ! এখানে , এখানে !! এটি হচ্ছে ভয়ঙ্কর  পাশবিক হৃদস্পন্দনের প্রহার  । ”

Comments

Popular posts from this blog